গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায়

যারা অনলাইনে কাজ করে তাদের গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায়,গুগল এডসেন্স এর কাজ কি এগুলো জানা অত্যন্ত জরুরী।ডিজিটাল যুগে ঘরে বসে আয় করার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও নির্ভরযোগ্য মাধ্যমগুলোর একটি গুগল অ্যাডসেন্স।আপনি যদি একটি ব্লগ, ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে নিয়মিত ও মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করেন তাহলে গুগল অ্যাডসেন্স হতে পারে আপনার প্যাসিভ ইনকামের অন্যতম উৎস।
গুগল- এডসেন্স- থেকে- আয়- করার- উপায়


তবে কেবলমাত্র অ্যাকাউন্ট খুললেই আয় শুরু হবে এমন না এর জন্য প্রয়োজন সঠিক কৌশল কনটেন্ট অপটিমাইজেশন এবং অ্যাডসেন্সের নীতিমালা সম্পর্কে ভালো ভাবে জানা।এই লেখায় আমরা গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করা উপায়, কীভাবে অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট খুলবেন, কী ধরনের কনটেন্ট বেশি আয় দেয়, আর কোন ভুলগুলো এড়িয়ে চলা জরুরি বিস্তারিতভাবে জানবো।আপনি যদি অ্যাডসেন্স ইনকামে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই গাইডটি আপনার জন্য আদর্শ শুরু হতে পারে।

পেজসূচিপত্র:গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায়

গুগল অ্যাডসেন্স কী

গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায় জানার আগে আপনার জানা উচিত গুগল অ্যাডসেন্স টা কী। Google AdSense গুগলের একটি বিজ্ঞাপন প্রদর্শন পরিষেবা যার মাধ্যমে ওয়েবসাইট,ব্লগের কিংবা ইউটিউব চ্যানেলের মালিকরা তাদের কনটেন্টে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।এটি গুগলের একটি প্যাসিভ ইনকামের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে থাকে।

সংশ্লিষ্ট কনটেন্টে দর্শকের আগ্রহের উপর ভিত্তি করে অ্যাডসেন্স ওয়েবসাইটে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিজ্ঞাপন দেখায়।আপনি যদি নিজের ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভালো কনটেন্ট লিখেন তাহলে গুগল আপনার সেই কনটেন্টে বিজ্ঞাপন দেখাবে। দর্শক সেই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে আপনি টাকা পাবেন।

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করা জনপ্রিয় কেন 

বর্তমানে অনলাইনে ইনকাম করার যত সহজ ও নিরাপদ উপায় রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো গুগল অ্যাডসেন্স।নিজের লেখা কনটেন্ট, ইউটিউব ভিডিও দিয়ে আয় করার সুযোগ থাকায় এটি খুব দ্রুতই তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। 


গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করতে কোনও টাকা পয়সা খরচ হয় না।আপনি নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে নিয়মিত কাজ করলেই অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন।আপনার ব্লগে একবার ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে পারলে সেটি থেকে আপনি দীর্ঘদিন পর্যন্ত আয় করতে পারবেন আপনি ব্লগে কাজ না করেন তবুও।

এটিই প্যাসিভ ইনকামের আসল সুবিধা।গুগল একটি বিশ্বমানের ব্র্যান্ড। তাদের অ্যাডসেন্স পরিষেবাও অনেক নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য।সময়মতো পেমেন্ট এবং স্বচ্ছ নিয়মের কারণে মানুষ গুগল অ্যাডসেন্সকেই বেশি পছন্দ করে।গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করতে আপনাকে কোডিং, টেকনিক্যাল কোনো কিছুই শিখতে হবে না।

শুধু ইউনিক ও ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করতে পারলেই আয় করা সম্ভব।আপনি যদি একজন শিক্ষার্থী,গৃহিণী,চাকরিজীবী হন তবুও আপনি ঘরে বসে নিজের সময় অনুযায়ী কাজ করতে পারেন এবং ইনকাম করতে পারেন।অনেকেই মনে করেন অ্যাডসেন্স ইনকামের জন্য ল্যাপটপ প্রয়োজন।কিন্তু অনেক ব্লগার শুধুমাত্র মোবাইল দিয়েই ব্লগ তৈরি করে এবং অ্যাডসেন্স থেকে ইনকাম করছেন।

বর্তমানে গুগল বাংলা কনটেন্টও সাপোর্ট করে।তাই আপনি বাংলায় ব্লগ লিখে অ্যাডসেন্স থেকে আয় করতে পারবেন।আপনি যত ভালো কনটেন্ট দেবেন এবং যত বেশি ট্রাফিক আনতে পারবেন আপনার আয় তত বাড়বে। অর্থাৎ ইনকামের কোনো লিমিট নেই আপনার পরিশ্রমের উপরই নির্ভর করবে।

অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট খোলার শর্তাবলি

2025 অনুযায়ী গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য সঠিক ও হালনাগাদ শর্তাবলি আপনার বুঝার ‍সুবিধার জন্য বাংলা ভাষায় সহজভাবে তুলে ধরা হলো যাতে আপনি সহজেই বুঝতে পারেন এবং আবেদন করতে প্রস্তুতি নিতে পারেন।

১. আপনার বয়স অবশ্যই ১৮ বছর হতে হবে।আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের কম হয় তাহলে আপনি আপনার নামে অ্যাকাউন্ট খোলতে পারবেন না।তবে আপনি চাইলে পরিবারের অন্যকারো নামে খুলে আপনি সেই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন।

২.গুগল অ্যাডসেন্স চালাতে আপনার একটি বৈধ Gmail অ্যাকাউন্ট আবশ্যই থাকতে হবে।

৩.অ্যাডসেন্সে আবেদন করার জন্য আপনার একটি ব্লগ/ওয়েবসাইট/ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। অর্থ্যাৎ Blogger/WordPress,কাস্টম ডোমেইন ওয়েবসাইট অথবা ইউটিউব চ্যানেলথাকতে হবে যাতে গুগল বিজ্ঞাপন দিতে পারে।

৪.আপনার ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত ও ইউনিক কনটেন্ট থাকতে হবে কমপক্ষে ১৫-২০টি মানসম্মত ব্লগ পোস্ট থাকতে হবে।প্রতিটি পোস্ট ১৫০০+ শব্দের হতে হবে।কোন পোস্ট,ছবি, ভিডিও কপি পেস্ট যেন না হয় ও পেজ লিংক সঠিকভাবে যুক্ত থাকতে হবে।

৫.আপনার ওয়েবসাইটের বয়স ন্যূনতম ১-৩ মাস পুরোনো হলে ভালো হয়। গুগল নতুন ওয়েবসাইটকে সাধারণত পর্যালোচনার জন্য বেশি সময় নিতে পারে।তাই ওয়েবসাইটটি ১ থেকে ৩ মাস পুরোনো হলে সহজে অ্যাপ্রুভ হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে।

৬.আপনার ওয়েবসাইটে গোপনীয়তা নীতি Privacy Policy, About এবং Contact Page থাকতে হবে।এই ৩টি পেজ না থাকলে অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

৭.ওয়েবসাইটে ভাল ডিজাইন ও সহজ নেভিগেশন থাকতে হবে।একটি পরিষ্কার ও মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন থাকা গুরুত্বপূর্ণ যেন ব্যবহারকারীরা সহজে ঘুরে দেখতে পারে।

৮.আপনার ওয়েবসাইটের .com/.net/.xyz এর মতো কাস্টম ডোমেইন থাকতে হবে তাইলে পেশাদারভাবে অ্যাপ্রুভ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৯.গুগল অ্যাডসেন্সের Policies অবশ্যই মানতে হবে যেমন কোন হিংসাত্মক কনটেন্ট, অ্যালকোহল, ড্রাগ, অস্ত্র ইত্যাদি বিষয় না দেওয়া,অটোমেটিক ট্র্যাফিক,বট ব্যবহার না করা,নিজের বিজ্ঞাপনে নিজে ক্লিক না করা।

১০.ওয়েবসাইটে Visitor থাকা ভালো তবে বাধ্যতামূলক নয়।অনেকেই ভেবে থাকেন যে অ্যাপ্রুভের জন্য হাজার হাজার ট্রাফিক দরকার।আসলে আপনার কনটেন্ট ভালো ও ইউনিক হলে কম ট্রাফিকেও আপনি অ্যাপ্রুভ পেতে পারেন।

কীভাবে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করবেন

নতুনদের জন্য সবচেয়ে সহজ ও ফ্রি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম হলো Blogger.com। গুগলের নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আপনি সহজেই ব্লগ খুলে আয় করতে পারেন।যদি না থাকে তবে একটি Gmail অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
Blogger.com এ যান ও আপনার একটি ব্লগ খুলুন।আপনার Gmail দিয়ে সাইন ইন করুন এবং Create New Blog এ ক্লিক করুন।এরপর ব্লগের নাম ও Address দিন।আপনাকে আপনার ব্লগের একটি ওয়েব অ্যাড্রেস .com যুক্ত নির্বাচন করতে হবে যেমন amarblog123.com এবং আপনার পছন্দ মতো একটি ডিজাইন থিম Theme সিলেক্ট করুন।

এরপর Create Blog এ ক্লিক করলেই আপনার ব্লগ রেডি।এখন আপনি ব্লগে কনটেন্ট পোস্ট তৈরি করতে পারবেন।ড্যাশবোর্ড থেকে New Post এ ক্লিক করুন,টাইটেল লিখুন তারপর মূল লেখাটি লিখুন,প্রয়োজন মতো ছবি,Labels যোগ করুন।SEO ফ্রেন্ডলি করে টাইটেল,সাবহেডিং দিয়ে Publish বাটনে চাপ দিলেই পোস্ট হয়ে যাবে।

Pages সেকশনে যেয়ে আলাদা আলাদা করে About Us  আপনি কে ও কী বিষয়ে লিখছেন,Privacy Policy  গোপনীয়তা সম্পর্কে তথ্য,Contact Us দর্শক যেন আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারে এই ৩টি পেজ তৈরি করতে হবে।

আপনার ব্লগ ডিজাইন ও সেটিংস সাজিয়ে ব্লগের Layout থেকে Widget যুক্ত করে Theme Customize করে ফন্ট ও রঙ পাল্টাতে পারবেন।Settings থেকে ব্লগের Title, Description ঠিক করতে হবে এবং আপনার Custom Domain সেট করতে হবে।


এরপর Google Search Consoleএ আপনার ব্লগ সাবমিট করে নিজের ব্লগের URL সাবমিট করুনগুগলে আপনার পোস্ট দ্রুত ইনডেক্স করতে।নিয়মিত SEO অনুযায়ী পোস্ট করুন ও ট্রাফিক বাড়ানোর চেষ্টা করুন।নির্দিষ্ট বিষয়ে লিখতে থাকুন,প্রচারের জন্য Social media তে শেয়ার করুন এবং অবশ্যই পোস্ট লিখার সময় ভালো টাইটেল, হেডিং, কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন।

১৫-২০টি মানসম্মত পোস্ট হলে এবং Google Search Console এ প্রতিদিন ১০০টা র্সাচ হলে AdSense এর জন্য আবেদন করুন।Adsense এ যেয়ে আপনার Gmail দিয়ে সাইন ইন করুন এবং Bloggerএর মাধ্যমে অ্যাডসেন্স অ্যাপ্লাই করে ফেলুন।এরপর গুগল আপনার ওয়েবসাইট রিভিউ করে অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ করবে।

কোন ধরণের কনটেন্ট অ্যাডসেন্সের জন্য উপযুক্ত

গুগল অ্যাডসেন্স শুধুমাত্র সেইসব কনটেন্টকে অনুমতি দেয় যেগুলো মূল্যবান, তথ্যবহুল, ইউনিক এবং Google Publisher Policies মেনে লিখা হয়ে থাকে।যেমন:শিক্ষামূলক বিষয়,স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সঠিক তথ্য,প্রযুক্তি রিভিউ ,ডিজিটাল মার্কেটিং, এসইও, অনলাইন আয়ের গাইড,ভ্রমণ গাইড,রেসিপি ও রান্না বিষয়ক পোস্ট,ঘরোয়া টিপস,লাইফ স্টাইল।

এই ধরনের কনটেন্ট পাঠককে উপকার দেয় এবং গুগলও এগুলোকে পছন্দ করে।নিয়মিত আপডেটযোগ্য ও Evergreen কনটেন্ট যেটা সময়ের সাথে সাথে পুরোনো হয় না,ইউজার ফ্রেন্ডলি ও ইউনিক কনটেন্ট একদম নিজের ভাষায় লেখা,অন্য কোথাও থেকে কপি না করা,গঠনগতভাবে পরিষ্কার ও পাঠযোগ্য কনটেন্ট।

কোন ধরণের কনটেন্ট অ্যাডসেন্সের জন্য অনুপযুক্ত

অশ্লীল কনটেন্ট,হিংসাত্মক,সন্ত্রাসমূলক কনটেন্ট,মাদক সংক্রান্ত,কপিরাইট ভঙ্গকারী কনটেন্ট,বেটিং সংক্রান্ত,ভুয়া তথ্য,হ্যাকিং/ক্র্যাকিং/অবৈধ অ্যাপ এই কনটেন্টগুলো লিখলে অ্যাডসেন্স রিজেক্ট করবে। এমনকি অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ডও হতে পারে।

গুগল অ্যাডসেন্স সবসময় চায় পাঠকের জন্য সহায়ক, নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য কনটেন্ট। আপনি যদি নিয়মিত ইউনিক ও উপকারী লেখা দেন তাহলে অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভ পাওয়া এবং ভালো আয় দুটোই সম্ভব।

অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার সহজ কৌশল

ইউনিক ও মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরি করতে হবে এবং প্রতিটি ব্লগ পোস্ট একেবারে নিজের ভাষায় ১৫০০+ শব্দের হতে হবে কনটেন্ট হতে হবে তথ্যবহুল,পাঠকের উপকারে লাগে এমন কমপক্ষে ১৫-২০টি পোস্ট থাকতে হবে,কপিরাইট ফ্রি ছবি ব্যবহার করতে হবে।গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করার উপায় জানতে হলে প্রথমে অ্যাডসেন্সের নীতিমালা ভালোভাবে বুঝতে ও জানতে হবে।

অবশ্যই Privacy Policy, About ও Contact Page  তৈরি করতে হবে।এই ৩টি পেজ গুগলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।ক্লিন ও মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন ব্যবহার করতে হবে।Simple, Clean ও SEOfriendly Theme ব্যবহার করুন এবং মেনুবার, সাইডবার ও Footer ঠিকমতো সাজান।অবশ্যই Responsive Theme নির্বাচন করতে হবে।

Broken Link, বেশি অ্যাড ব্যবহার না করার চেষ্টা করবেন।Blogger Websiteএর Custom Domain থাকলে ভালো হয় যদিও .blogspot.com ডোমেইন থেকেও অ্যাপ্রুভ হয় কিন্তু .com ডোমেইন থাকলে দ্রুত অ্যাপ্রুভ হওয়ার সুযোগ থাকে বেশি।

ট্রাফিক বেশি না থাকলেও সমস্যা নেই কিন্তু রিয়েল ভিজিটর হতে হবে।গুগল ভিজিটরের সংখ্যার চাইতে Content Quality ও User Experienceকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে।ভিজিটর বাড়াতে বট ট্রাফিক,অটোমেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করবেন না।ভিজিটর বাড়াতে আপনার পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে পারেন।

Google Search Console ও Google Analytics সংযুক্ত করুন।Search Console গুগলে সাইট ইনডেক্স করার জন্য এবং Analytics ট্রাফিক মনিটর করার জন্য। Blogger,WordPress দুটিতেই এ সহজেই Google Search Console ও Google Analytics যুক্ত করা যায়।

অবশ্যই AdSense এর Program Policies মেনে চলবেন।AdSense অ্যাপ্রুভ হওয়ার আগে ও পরে অবশ্যই কিছু নিয়মগুলো মানতে হবে।যেমন-
  • নিজের বিজ্ঞাপনে নিজে ক্লিক করবেন না
  • গোপনীয়তা লঙ্ঘন, অশ্লীলতা,কপিরাইট ভঙ্গ করবেন না
  • গুগলের অ্যাড কোড পরিবর্তন করবেন না
  • ট্রাফিক বাড়াতে প্রতারণামূলক পদ্ধতি ব্যবহার করবেন না
  • নতুন ডোমেইনে সাইটের বয়স কমপক্ষে ১-৩ মাস হোক 
গুগল কখনও কখনও নতুন সাইট রিভিউ করতে বেশি সময় নেয়।তবে১ মাসের বেশি পুরোনো হলে এবং মানসম্মত কনটেন্ট থাকলে অ্যাপ্রুভ সহজ হয়।Bloggerএর Earnings ট্যাব থেকে সরাসরি আবেদন দিন।Custom Domain থাকলে সেটি Settings > Publishing থেকে যুক্ত করুন।

গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভ পেতে কৌশল না দরকার ধৈর্য্য ও মানসম্মত কনটেন্ট।নিয়ম মেনে কাজ করলে অ্যাডসেন্স নিশ্চিতভাবে অ্যাপ্রুভ হয় এবং আপনি আয় শুরু করতে পারবেন।

একটি SEO ফ্রেন্ডলি ব্লগ কেমন হওয়া উচিত

Search Engine Optimization হল এমন কিছু নিয়ম ও কৌশল অনুসরণ করা যার মাধ্যমে আপনার ব্লগ পোস্ট Google এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক পায় এবং সহজেই ভিজিটর আসে।পোস্টের বিষয়বস্তু বুঝিয়ে এমন একটি শিরোনাম দিন যেটা ইউজার এবং গুগল দুজনের কাছেই স্পষ্ট হবে।

কীওয়ার্ড অবশ্যই শিরোনামে যুক্ত থাকতে হবে এবং শব্দ সংখ্যা ৫-৮শব্দের মধ্যে রাখার চেষ্টা করবেন।Meta Description ঠিকমতো লেখার চেষ্টা করুন এবং ১৫০ শব্দের মধ্যে সারাংশ ও ফোকাস কীওয়ার্ড রাখতে হবে।

পাঠককের ক্লিক করার মতো আকর্ষণীয় করে Permalink কাস্টমাইজ করে ও পোস্টের মূল কিওয়ার্ড দিয়ে permalink তৈরি করুন।দুই শব্দের permalink হলে মাঝে ড্যাশ - চিহু ব্যবহার করতে হবে।H1, H2, H3 হেডিং স্ট্রাকচার ঠিক রাখতে হবে।Title স্বয়ংক্রিয় Blogger/WordPress এ H1 সেট করা থাকে।মূল বিষয়  H2 ও H2 এর অধীন সাবপয়েন্ট H3 ট্যাগ দিতে হবে।

এগলো গুগলকে কনটেন্ট বুঝতে সাহায্য করেও পাঠকের জন্য সহজ করে তোলে।কপি না করে  সবসময় একদম নিজের লেখা ইউনিক ও বিস্তারিত কনটেন্ট লিখার চেষ্টা করুন সর্বনিম্ন ১৫০০শব্দের।প্রতিটি অনুচ্ছেদ ৩-৪ লাইনের মধ্যে রাখুন এতে আপনার কন্টেন্ট দেখতে সুন্দর দেখাবে।

Bullet Point, Table, Bold, Color ব্যবহার করলে পাঠযোগ্যতা বাড়ে।Internal ও External Link ব্যবহার করুন।Internal Link বলতে নিজের এক পোস্টের মধ্যে অন্য পোস্টের লিংক দেওয়াকে বুঝায়।External Link বলতে বিশ্বাসযোগ্য অন্য ওয়েবসাইটের লিংক বুঝায়।সবসময় SEOফ্রেন্ডলি Image ব্যবহার করবেন।

প্রতিটি ছবি হালকা ও দ্রুত লোড হয় এমন ফরম্যাটে যেমন-WEBP তে দিন।ছবিতে কিওয়ার্ডসহ Alt Text দিন।ছবির নাম অর্থপূর্ণভাবে Mobile Friendly ও Fast Loading দিতে হবে।ব্লগ ডিজাইন মোবাইলে সহজে দেখা যায় এমন থিম ব্যবহার করুন এবং লোড টাইম ৩ সেকেন্ডের কম রাখার চেষ্টা করুন।

SEO ফ্রেন্ডলি ব্লগ শুধু গুগলে র‍্যাঙ্ক করার জন্য না বরং পাঠকের জন্যও উপযোগী হতে হবে।আপনি যত পরিষ্কার ও গঠনভিত্তিক কনটেন্ট দেবেন ততই আপনার সাইট গুগল ও দর্শক উভয়ের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠবে।

গুগল অ্যাডসেন্স বিজ্ঞাপন কিভাবে কাজ করে

গুগল অ্যাডসেন্স হল গুগলের একটি বিজ্ঞাপন প্রোগ্রাম।ওয়েবসাইট মালিক এবং ব্লগারদের তাদের সাইটে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারে।প্রথমে আপনি গুগল অ্যাডসেন্সে আবেদন করে নিন এবং আপনার সাইটে রেজিস্টার করেন।

গুগল আপনার সাইট রিভিউ করে দেখবে যে আপনি নীতিমালা মেনে চলছেন কিনা তারপর আপনাকে অনুমদন দেবে।অনুমোদনের পর গুগল আপনাকে একটি বিজ্ঞাপন কোড দেবে।আপনি সেই কোড আপনার সাইটের HTML বসালে গুগলের সার্ভার থেকে সেই জায়গায় বিজ্ঞাপন লোড হবে এবং আপনার সাইটে গুগল স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবে।

গুগল ব্যবহারকারীর লোকেশন, আগ্রহ, ব্রাউজিং হিস্ট্রি এবং ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তু অনুসারে বিজ্ঞাপন নির্বাচন করে দেখানো হয়।যখন কোন ভিজিটর আপনার সাইটের বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে অথবা বিজ্ঞাপন দেখবে তখন আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা উপার্জন করতে পারবেন।গুগল প্রতি ক্লিক, প্রতি হাজার ভিউ ভিত্তিতে পেমেন্ট করে।

গুগল পেমেন্ট প্রক্রিয়া

গুগল মাসে একবার আপনার আয়ের হিসাব করে থাকে।নির্দিষ্ট $100 অথবা স্থানীয় মুদ্রায় সমপরিমাণ টাকা আপনার সাইটে জমা হলে আপনি আপনার টাকা উঠাতে পারবেন।গুগল সাধারণত সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে,পেপাল, ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন ইত্যাদিতে পেমেন্ট পাঠায়।

গুগল অ্যাডসেন্সের ড্যাশবোর্ডে আপনি আপনার বিজ্ঞাপনের কার্যকারিতা দেখতে পারবেন যেমন: ক্লিক সংখ্যা, আয়, ইমপ্রেশন ইত্যাদি।এই তথ্য থেকে আপনি বুঝতে পারবেন কোন বিজ্ঞাপনটি বেশি ভালো কাজ করছে।

গুগল অ্যাডসেন্স একটি স্বয়ংক্রিয় ও অত্যন্ত স্মার্ট বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্ম যা ওয়েবমাস্টার ও ব্লগারদের জন্য আয় করার একটি সহজ এবং নিরাপদ উপায়। এটি ব্যবহার করতে প্রযুক্তিগত দক্ষতার খুব বেশি দরকার হয় না এবং আপনি আপনার কনটেন্টের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন দেখাতে পারবেন।

ব্লগে বিজ্ঞাপন বসানোর নিয়ম ও পদ্ধতি

গুগল অ্যাডসেন্সে গিয়ে আপনার Gmail দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট খুলুন।আপনার ওয়েবসাইটটি যুক্ত করে অ্যাপ্রুভ এর জন্য আবেদন করুন।গুগল আপনার সাইট রিভিউ করে অ্যাকাউন্ট অনুমোদন দিলে আপনি বিজ্ঞাপন কোড পাবেন।অ্যাডসেন্স থেকে বিজ্ঞাপন কোড সংগ্রহ করে আপনি অ্যাডসেন্স ড্যাশবোর্ডে লগইন করতে পারবেন।

এরপর Ads > By ad unit > Create New Ad Unit এ যেয়ে আপনার পছন্দ মতো বিজ্ঞাপনের ধরন  Display ads, In-feed ads, In-article ads ইত্যাদি নির্বাচন করে বিজ্ঞাপনের নাম দিয়ে কোড তৈরি করতে হবে।তৈরি কোডটি কপি করে আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন কোড বসাতে হবে।

এরপর Blogger ড্যাশবোর্ডে গিয়ে বাম মেনু থেকে Layout থেকে আপনার ওয়েবসাইটে যেখানে বিজ্ঞাপন দেখাতে চান সেখানে Add a Gadget ক্লিক করতে হবে।HTML,JavaScript গ্যাজেট সিলেক্ট করে Title খালি রাখুন অথবা Advertisement লিখতে পারেন।কপি করা অ্যাডসেন্স কোড পেস্ট করে Save করলেই হয়ে যাবে।


ব্লগের Layout এ কোড বসানোর জায়গা ড্র্যাগ করে ঠিকমতো সাজান।Save arrangement দিন।ব্লগে গিয়ে দেখে নিন বিজ্ঞাপন ঠিকঠাক দেখাচ্ছে কিনা।সবসময় পেজের HTML মোডে কোড পেস্ট করুন। যেকোনো ডিভাইসে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে এমন Responsive বিজ্ঞাপন ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।

এতে মোবাইল ও ডেস্কটপ উভয়েই ভালো দেখায় এবং ক্লিকও বাড়ে।সাধারণত ভালো ফলাফলের জন্য হেডার এর নিচে,পোস্টের শুরুতে,পোস্টের মাঝখানে অথবা শেষে,সাইডবারে বিজ্ঞাপন টালানোর চেষ্টা করুন ।আপনার বিজ্ঞাপন নিয়মিত মনিটর করুন ও অ্যাডসেন্স ড্যাশবোর্ড থেকে বিজ্ঞাপনের পারফরম্যান্স চেক করুন।

কোথায় ক্লিক বেশি হচ্ছে তা লক্ষ্য করে প্রয়োজনীয় জায়গায় কোড পরিবর্তন করতে পারেন।কিন্তু অবশ্যই নিজের বিজ্ঞাপনে নিজে ক্লিক করবেন না।কখনোই অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন ব্যবহার করবেন না এতে ভিজিটোররা বিরক্ত হতে পারে।

নতুন ব্লগে অল্প করে বিজ্ঞাপন বসান পরে প্রয়োজনমতো বাড়ান।গুগল অ্যাডসেন্স বিজ্ঞাপন বসানো খুবই সহজ তবে সফলতার জন্য বিজ্ঞাপনের সঠিক জায়গা নির্বাচন ও নিয়মিত মনিটরিং প্রয়োজন।পাশাপাশি গুগল পলিসি মেনে চলাটা জরুরি।

CPC, CPM ও CTRএগুলো কী এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ

অনলাইন বিজ্ঞাপন ও গুগল অ্যাডসেন্সের ক্ষেত্রে CPC, CPM ও CTR তিনটি শব্দই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন সহজ ভাষায় বুঝি CPC কী।Cost Per Click এর অর্থ আপনি প্রতি ক্লিকে কত টাকা পাবেন তার পরিমান।

আপনার আয় মূলত CPC এর উপর নির্ভর করবে।প্রতি ক্লিকে উচ্চ CPC মানে বেশি আয় হয়।তাই ভালো বিষয় ও বিজ্ঞাপন পছন্দের জন্য CPC জানা জরুরি।

CPM মানে প্রতি হাজার বিজ্ঞাপন ইমপ্রেশনে অথবা দর্শনে আপনি কত টাকা পাবেন।যখন আপনার ওয়েবসাইটে অনেক ভিজিটর থাকে কিন্তু ক্লিক কম হয় তখন Cost Per Mille ভিত্তিক আয় হয়। 

CTR অর্থ কত শতাংশ দর্শক বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন তার হার।

Click Through Rate=(বিজ্ঞাপনে ক্লিকের সংখ্যা/বিজ্ঞাপন দেখার সংখ্যা)×100.যেমন-আপনার বিজ্ঞাপন যদি ১০০০ জন দেখে এবং ২০ জন ক্লিক করে তাহলে CTR = (20/1000)*100 = ২%।CTR বেশি হলে গুগল মনে করে আপনার সাইটের বিজ্ঞাপনগুলি দর্শকের কাছে প্রাসঙ্গিক ও আকর্ষণীয়।

এতে বিজ্ঞাপনদাতারা বেশি বিজ্ঞাপন দিতে ইচ্ছুক হন ফলে আপনার আয় বাড়বে।আপনার ওয়েবসাইটের আয় বৃদ্ধির জন্য CPC, CPM ও CTR ভালোভাবে বুঝে কাজ করা খুবই জরুরি। ভালো কনটেন্ট, ভালো ডিজাইন ও প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন থাকলে CTR ও CPC দুটোই বাড়ে আর CPM বেশি হলে ভিউ এর ভিত্তিতে আয়ও বাড়ে।

ব্লগ থেকে প্রতিদিন কত আয় সম্ভব

ব্লগিং থেকে আয় ধীরে ধীরে বাড়ে। প্রথম দিকে কম আয় হলেও নিয়মিত চেষ্টা ও ভালো কনটেন্ট দিয়ে আপনি প্রতিদিন ভালো আয় করতে পারবেন।ধৈর্য ও পরিকল্পনা ভালো হলে মাসে লক্ষাধিক টাকারও আয় সম্ভব।গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করার উপায় হিসেবে অনেকেই এখন ইউটিউবে ভিডিও বানিয়ে মনিটাইজেশন চালু করে আয় করছে।

আয় নির্ভর করে ব্লগের ট্রাফিক এর ওপর।আপনার ওয়েবসাইটে যত বেশি ভিজিটর তত বেশি আপনার আয়।ভালো নীচ যেমন- ফিনান্স, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য কিছু নিচে CPC বেশি হয়।আবার কনটেন্ট কোয়ালিটি ভালো ও ইউজার ফ্রেন্ডলি হলে ভিজিটর বেশি থাকে।বিজ্ঞাপনের ধরন ও সংখ্যা ভালোভাবে প্লেস করলে আয় বাড়ে।

SEO ও মার্কেটিং ব্লগ যত বেশি সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্ক করবে তত বেশি ভিজিটর হবে আপনার আয় তত হবে।শুরুতে ছোট ব্লগের জন্য সাধারণত ১০০-৫০০ ভিজিটরের জন্য $0.5-$2,কনটেন্ট ভালো হলে ৫০০-২,০০০ ভিজিটরে $2-$10,মধ্যম মানের ব্লগে ২,০০০-১০,০০০ ভিজিটরে $10-$50+,জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের জন্য ১০,০০০+ ভিজিটরে $50 - $২০০+ পর্যন্ত হয়ে থাকে।

আয় বেশি নির্ভর করে niche, ট্রাফিক ও বিজ্ঞাপনের ধরন ও প্লেসমেন্টের ওপর।নিয়মিত ইউনিক ও গুণগত মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরি করলে এবং SEO তে পারফরম্যান্স ভালো করলে আয় বাড়ানো সম্ভব।একজন নতুন ব্লগার দিনে ১০০০ ভিজিটর পেলে গড়ে $৫-$৭ আয় করতে পারেন।

অ্যাডসেন্স নীতিমালা ও ভুল করলে কী হতে পারে

গুগল অ্যাডসেন্স নীতিমালা  ব্যবহার করার সময় অবশ্যই মেনে চলতে হবে।নীতিমালা না মানলে আপনার অ্যাকাউন্ট বাতিল হয়ে যেতে পারে।আপনার বুঝার জন্য অ্যাডসেন্স নীতিমালা সহজ করে জানি চলুন।
  • Click Fraud থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • নিজের বিজ্ঞাপনে নিজে ক্লিক করা অথবা অন্য কাউকে ক্লিক করানো নিষিদ্ধ।
  • কোনো অটোমেটেড টুল দিয়ে ক্লিক বাড়ানো যাবে না।
  • কপিরাইট ও অবৈধ কনটেন্ট থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • কপিরাইট লঙ্ঘনকারী কনটেন্ট ব্যবহার করা যাবে না।
  • অবৈধ, ভুয়া, অনুমতি ছাড়া অন্য কারো কাজ প্রকাশ করা না।
  • অশ্লীল ও অবৈধ বিষয়বস্তু নিষিদ্ধ
  • অশ্লীলতা, ঘৃণ্য ভাষা, সহিংসতা,ঘৃণ্যতা প্রদর্শন করা যাবে না।
  • সন্ত্রাস, মাদক, জুয়া, অবৈধ কার্যকলাপ সম্পর্কিত কনটেন্ট দেওয়া যাবে না।
  • বিজ্ঞাপন এমনভাবে বসাতে হবে যাতে অজান্তে ভুলে ক্লিক না হয়ে যায়।
  • অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন দিয়ে ইউজার বিরক্ত করবেন না।
  • ব্যবহারকারীর গোপনীয়তাকে সম্মান করুন।
  • ইউজারের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে হবে।
Privacy Policy পেজ রাখতে হবে যেখানে কুকি ও ডাটা ব্যবহারের তথ্য থাকবে।অ্যাডসেন্স নীতিমালা ভালোভাবে পড়ার লিঙ্ক।

ভুল করলে কী হতে পারে

নিজের বা অন্য কারো জন্য ক্লিক বাড়াতে গেলে আপনার অ্যাকাউন্ট স্থগিত হয়ে যেতে পারে।অবৈধ, কপিরাইট কনটেন্ট অ্যাকাউন্ট বাতিল অথবা পেমেন্ট আটকায় যেতে পড়ে। আপত্তিকর  অর্থাৎ অশ্লীল বিষয়বস্তুর বিজ্ঞাপন দেখালে অ্যাকাউন্ট বন্ধ ও সঠিকভাবে বিজ্ঞাপন বসানো না হলে আয় কমে যেতে অথবা অ্যাকাউন্ট স্থগিত হতে পারে।

গোপনীয়তা লঙ্ঘন করলে অ্যাকাউন্ট,বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়ে যেতে পারে।গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করতে চাইলে অবশ্যই নিয়ম কানুন মেনে চলুন।নীতিমালা লঙ্ঘন করলে শুধু আয় বন্ধ হবে না সম্পূর্ণ অ্যাকাউন্টও বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যা অনেক সময় পুনরুদ্ধার করা কঠিন।

মোবাইল ফ্রেন্ডলি ব্লগ ও অ্যাডসেন্স ইনকাম

মোবাইল ফ্রেন্ডলি ব্লগ মানে মোবাইলে সহজে দেখা যায়,পড়ে বোঝা এবং ব্যবহার করা যায় এমন একটি ওয়েবসাইট ঠিক ডেস্কটপ ভার্সনের মতোই।অর্থাৎ স্ক্রিন সাইজ অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিজাইনটি অ্যাডজাস্ট হয় এমন।

মোবাইল ফ্রেন্ডলি ব্লগের বৈশিষ্ট্য

মোবাইল, ট্যাব, ল্যাপটপে যেনো সমানভাবে দেখা যায়।দ্রুত লোড হয় ইউজার বিরক্ত হয় না।মেনু, বাটন, লিংক মোবাইলে ক্লিকযোগ্য হয়।অ্যাডগুলো মোবাইল স্ক্রিনে যেন ভেঙে না যায়।এবং ছোট স্ক্রিনেও লেখাগুলো পরিষ্কার বোঝা যায়।

গুগল অ্যাডসেন্সে মোবাইল ফ্রেন্ডলি ব্লগ কেন গুরুত্বপূর্ণ

Google প্রথম মোবাইল ভার্সন দেখে র‍্যাঙ্কিং করে। ইউজারের ৭০-৮০% ভিজিট মোবাইল থেকে হয়ে থাকে।তাই মোবাইলে অসুবিধা হলে ট্রাফিক হারানোর ও মোবাইল রেস্পন্সিভ না হলে Ad ঠিকভাবে নাও দেখা যেতে পারে।এতে আপনার CTR ও CPC কমে যেতে পারে।

মোবাইল ফ্রেন্ডলি হলে Google ব্লগটিকে High Quality ধরে।বিজ্ঞাপন মোবাইলে ঠিকভাবে লোড না হলে
ভিজিটর ইন্টারঅ্যাকশন কমে CTR ও CPM দুইই কমে যায়।ফলে আপনি Google Ranking এ পিছিয়ে পড়বেন ও আপনার ইনকাম কমে যাবে।

ইউটিউব বনাম ব্লগ কোনটা থেকে বেশি ইনকাম

ইউটিউব ও ব্লগ দুটোতেই ইনকামের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কোনটা বেশি ইনকাম দেবে তা আপনার দক্ষতা,কনটেন্টের মান,ভিউ ও ট্রাফিক,নিস অথবা বিষয়,Ad Type এবং CPC, CPM রেটব্লগিং এর ওপর নির্ভর করবে। CPC ও CPM সাধারণত ইউটিউবের তুলনায় ব্লগে অনেক বেশি।

Google Ads ব্লগে টার্গেটেডভাবে দেখায় ফলে ক্লিক ও ইনকাম বেশি হয়।অন্যদিকে ইউটিউব ভিডিওর View বেশি হলেও CPM যদি কম হয়।তবে ব্র্যান্ড স্পনসর পেলে ইনকাম অনেক বাড়ে।ব্লগে High CPC Keywords এ কম ভিউতেও বেশি ইনকাম হতে পারে।

যদি আপনি দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী ইনকাম চান তবে ব্লগিং এ SEOকরে কাজ করার চেষ্টা করুন।আর যদি আপনি ভিডিও বানাতে আগ্রহী হন তবে ইউটিউবেও ভালো ইনকাম সম্ভব।তবে সবচেয়ে ভালো ফল আসে ব্লগ + ইউটিউবে একসাথে কাজ করলে।

বাংলাদেশ থেকে অ্যাডসেন্স ইনকাম তুলতে কি করতে হয়

বাংলাদেশ থেকে অ্যাডসেন্স ইনকাম তুলতে AdSense অ্যাকাউন্টে পেমেন্ট মেথড সেটআপ করতে হবে।অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে ঠিকভাবে আপনার NID অনুযায়ী নাম ও ঠিকানা দিন।সঠিক ঠিকানা ও পোস্টাল কোড ব্যবহার করুন যাতে পরবর্তীতে ব্যাংক ও পরিচয় যাচাইয়ে সমস্যা না হয়।অ্যাডসেন্সে আপনার ইনকাম যখন $10 পৌঁছাবে গুগল আপনার ঠিকানায় ডাকপত্রে PIN Code পাঠাবে।এই চিঠি ২-৪ সপ্তাহে আপনার ঠিকানায় পৌঁছে যাবে।

সেই PIN Code দিয়ে আপনার অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অ্যাকটিভেট করতে হবে।আপনার Total Earnings যখন $100 বা তার বেশি হবে তখন গুগল আপনার পেমেন্ট রিলিজ করবে।এর আগেই আপনাকে একটি Bank Account যুক্ত করতে হবে।

অ্যাডসেন্সে আপনার ব্যাংকের নাম অনুযায়ী Beneficiary Name,Bank Name,SWIFT Code,আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর,Currency,ব্যাংকের শাখার ঠিকানা দিয়ে Bank Account যুক্ত করতে হবে। টাকা আসবে USDতে এবং আপনার ব্যাংক BDT তে কনভার্ট করে আপনাকে দেবে।টাকাটা 2-5 কার্যদিবসের মধ্যে আপনার অ্যাকাউন্টে চলে আসবে।

বাংলাদেশে এখনো গুগল  Payoneer,Wise ব্যবহার করার অনুমতি দেয় নাই।শুধু Direct Bank Transfer Wire Transfer এর মাধ্যমে টাকা পাওয়া যায়।ব্যাংকে USD গ্রহণের জন্য আপনার NID ও অ্যাকাউন্ট নাম এক রাখতে হবে।ভুল তথ্য দিলে টাকা আটকে যেতে পারে।তবে নির্ভরযোগ্য ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুললে আপনি দ্রুত এবং নিরাপদভাবে ইনকাম তুলতে পারবেন।

একাধিক সাইটে অ্যাডসেন্স ব্যবহার করা যায় কি না

একাধিক সাইটে গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করা যায় তবে এতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত ও নিয়ম আছে যা অবশ্যই মানতে হবে।প্রতিটি নতুন সাইট অ্যাডসেন্সে অ্যাড করে রিভিউ করাতে হবে।আগে একবার অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পেলে সব সাইটেই অ্যাড চালানো যেত।

কিন্তু এখন আপনার প্রতিটি নতুন ওয়েবসাইটকেও অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে যুক্ত করে গুগলের রিভিউর জন্য জমা দিতে হবে।রিভিউয়ে সাইটটি AdSense Policy অনুসারে হলে ২৪-৭২ ঘণ্টার মধ্যে অ্যাপ্রুভ হয়ে যাবে।

তাই নতুন সাইট যুক্ত করার আগে অবশ্যই সাইটটিকে AdSense Policy অনুযায়ী প্রস্তুত করুন। আপনার প্রতিটি সাইট যেন ইউনিক, মানসম্মত এবং ফাস্ট লোডিং হয় সেদিকে খেয়াল রাখলে ইনকাম আরও বৃদ্ধি পাবে।

অ্যাডসেন্স ইনকামের বাস্তবতা ও সাফল্যের কৌশল

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে ইনকাম করা ১০০% সম্ভব তবে এটি রাতারাতি ধনী হওয়ার কোনো পদ্ধতি না। এখানে ধৈর্য, কনটেন্ট কোয়ালিটি ও ট্রাফিক এই তিনটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।আপনার ইনকাম নির্ভর করবে ট্রাফিক ও কনটেন্টের উপর।গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করার উপায় সহজ হতে পারে যদি আপনি ট্রেন্ডিং ও এসইও ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন।

ভিজিটর কোন দেশ থেকে আসছে তার ওপর ও আয় কম বেশি নির্ভর কর।বাংলাদেশে CPC তুলনামূলক কম।বাংলাদেশ থেকে ১ ক্লিকের দাম গড়ে ২-৫ টাকা হতে পারে।কিন্তু ইউএসএ, কানাডা, ইউকে, অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা ট্রাফিকে প্রতি ক্লিকের দাম হতে পারে ২০-৮০ টাকা অথবা তারও বেশি হয়।

অ্যাডসেন্সে সফলতার কৌশল

একটি নির্দিষ্ট নিস বেছে নিন যেমন: স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, শিক্ষা, অর্থ উপার্জনের উপায়, রেসিপি, ট্রাভেল, ইত্যাদি।একটি নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক ব্লগ Googleএ ভালো র‍্যাঙ্ক করে এবং অ্যাডসেন্সেও ভালো আয় দেয়।উন্নতমানের SEO করার চেষ্টা করুন।প্রতিটি কনটেন্টে Headings অর্থাৎ H1, H2, H3 ব্যবহার করুন।

ফোকাস কিওয়ার্ড দিন।দ্রুত লোডিং ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন।Mobile Friendly ডিজাইন রাখুন।Internal ও  external linking করুন।ট্রেন্ডিং ও লো কম্পিটিশন কিওয়ার্ড টার্গেট করুন।ভালো Keyword পেতে Google Keyword Planner,Ubersuggest দিয়ে কিওয়ার্ড খুঁজুন।

কম সার্চ ভলিউম, কম কম্পিটিশন, High CPC থাকলে সেটাই ব্যবহার করুন।নিয়মিত ও ইউনিক কপিপেস্ট ছাড়া একদম নিজস্ব ভাষায় কনটেন্ট লিখে পোস্ট করার চেষ্টা করুন।অন্তত ১০০০-১৫০০ শব্দের SEOFriendly আর্টিকেল লিখুন।

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ট্রাফিক আনার চেষ্টা করুন।ফেসবুক, পিন্টারেস্ট, টেলিগ্রাম, ইমেইল মার্কেটিং এগুলো ব্যবহার করে শুরুতে ফ্রি ট্রাফিক আনতে পারেন।ইউএস,ইউকে ভিজিটর টার্গেট করার চেষ্টা করুন।গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করার উপায় শিখে ঘরে বসে প্যাসিভ ইনকাম করার একটি দারুণ সুযোগ পেতে পারেন।

আপনার কনটেন্ট বা কীওয়ার্ড এমনভাবে তৈরি করুন যাতে গুগল সেগুলো ইউরোপ আমেরিকান ট্রাফিককে দেখায়।কারণ ওদের ক্লিক মানে ইনকাম অনেক বেশি।নিয়ম মেনে অ্যাডসেন্স ব্যবহার করুন
কারণ নীতি লঙ্ঘন করলেই অ্যাকাউন্ট ব্লক হয়ে যেতে পারে।

অ্যাডসেন্স ইনকামে সফল হতে হলে SEO, কিওয়ার্ড রিসার্চ এবং কনটেন্ট কোয়ালিটির বিকল্প নেই। ৩-৬ মাস মনোযোগ দিয়ে কাজ করলে ব্লগ থেকেই মাসে হাজার থেকে লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।বিদেশি ট্রাফিক হলে ইনকাম ৩-৫ গুণ পর্যন্ত বেশি হতে পারে।

লেখকের পরামর্শ:গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার উপায়

গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করার উপায় জানার পাশাপাশি ট্র্যাফিক সোর্স যেমন গুগল, ফেসবুক, পিন্টারেস্ট ইত্যাদিতেও আপনাকে দক্ষ হতে হবে।গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করা সম্ভব তবে এর জন্য ধৈর্য, পরিকল্পনা ও পরিশ্রম জরুরি।

প্রথমেই এমন একটি টপিক নির্বাচন করুন যা মানুষ সার্চ করে এবং যেটির উপর আপনি নিয়মিত মানসম্পন্ন কনটেন্ট দিতে পারবেন।এর পর ধাপে ধাপে SEO শিখে প্রতিটি পোস্টকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপটিমাইজ করুন।ভালো ট্রাফিক পেতে কিওয়ার্ড রিসার্চ টুল ব্যবহার করুন।

মনে রাখবেন যতো বেশি ইউজার আপনার সাইটে আসবে এবং মানসম্মত কনটেন্ট পাবে তত ক্লিক বেশি হবে সাথে আপনার ইনকামও বেশি হবে।নীতিমালা না ভেঙ্গে ধৈর্য ধরে নিয়মিত কাজ করলেই অ্যাডসেন্স আপনার দীর্ঘমেয়াদি আয়ের একটি বিশ্বস্ত মাধ্যম হতে পারে।ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url