ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহার।প্রাকৃতিক ঘরোয়া সমাধান


আপনি কি ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহারের জাদুকরীসব গুণাবলী সম্পর্কে জানেন?থানকুনি পাতার টোনার, ফেসপ্যাক, যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা সহ আরো বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে আপনি কি অবগত?থানকুনি এমন একটি ভেষজ উদ্ভিদ যা প্রাচীনকাল থেকে ত্বকের যত্নে ব্যবহার হয়ে আসছে।
ত্বকের- যত্নে- থানকুনি -পাতার- ব্যবহার






আমাদের অনেকেরই ধারণা ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের যত্ন নিলে ভালো ফল পাওয়া যায় না।কিন্তু প্রকৃত অর্থে সঠিক নিয়মে থানকুনি পাতা ব্যবহার করলে এটি ত্বকের ভেতর থেকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়ায়।এই লেখার মাধ্যমে আমরা জানব থানকুনি পাতা সম্পর্কে বিস্তারিত।থানকুনি পাতার ব্যবহারের নিয়ম, থানকুনি পাতার কাজ, পুষ্টিগুণ,নানা সমস্যার সমাধান সহ আরোও অনেক কিছু ।চলুন শুরু করা যাক।

পেজ সূচিপত্র:ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহার।প্রাকৃতিক ঘরোয়া সমাধান

থানকুনি পাতা কি

ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহার প্রাচীনতম কার্যকর পদ্ধতি।একটি ঔষধি গাছ হিসেবে আমাদের দেশে পরিচিত।।থানকুনি পাতা দেখতে গোলাকার এবং সবুজ কালারের কিছুটা খাজকাটা খাজকাটা। থানকুনি পাতার বৈজ্ঞানিক নাম Centella asiatica.থানকুনি পাতা একটি অত্যন্ত উপকারী ও কার্যকরী প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান।

থানকুনি পাতার দৈর্ঘ্য ২ সেন্টিমিটার থেকে ৫ সেন্টিমেন্ট মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।দেখতে কিছুটা ছোট ছাতার আকৃতির ।থানকুনি গাছ লতা জাতীয় উদ্ভিদ এবং এটি মাটির উপর ছড়িয়ে জন্মায়।এবং খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

থানকুনি পাতার পুষ্টিগুন

থানকুনি পাতার পুষ্টিগুণের জন্য ওষুধ হিসেবে বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়।থানকুনি পাতা বিভিন্ন রকমের ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন, ফাইবার, শক্তিসহ বিভিন্ন উপাদান সরবরাহ করে থাকে যা আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।আসুন থানকুনি পাতার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
পুষ্টি উপাদান পরিমাণ
ক্যালরি ৩৮ কিলোক্যালরি
প্রোটিন ২.৬ গ্রাম
ফ্যাট ০.৫ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট প্রায় ৫ গ্রাম
ফাইবার ৩.৫ গ্রাম
ক্যালসিয়াম ১৭১ মিলিগ্রাম
ফসফরাস ৫৬ মিলিগ্রাম
আয়রন ৫.৬ মিলিগ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ৬০ মিলিগ্রাম
পটাসিয়াম ৩৪৪ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ৪৩ মিলিগ্রাম
জিঙ্ক ০.৮ মিলিগ্রাম
কপার ০.১৬ মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ ০.৭৬ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ৪৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ ৬৫৪০ IU
ভিটামিন বি১ ০.১৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২ ০.১৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি৩ ০.৬ মিলিগ্রাম

থানকুনি পাতা একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক ঔষধি উদ্ভিদ ।আপনি যদি খাদ্য তালিকায় নিয়মিত থানকুনি পাতা রাখেন তাহলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এবং আপনার শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

থানকুনি পাতার মুগ্ধকর দারুন সব উপকারিতা

থানকুনি পাতা প্রকৃতির এক এমন উপাদান যা প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের উপকারে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি শুধু একটি খাবার উপাদানের নামই না বরং এটি আমাদের শরীর ও মনের অসংখ্য ভাবে উপকার করে আসছে। আসুন আমরা ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহার সহ থানকুনি পাতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা সম্পর্কে জানি।

স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে

থানকুনি পাতা মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্র উদ্দীপিত করে স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।এছাড়াও থানকুনি পাতা নিউরোট্রান্সমিটার উৎপন্ন হইতে সাহায্য করে।যার ফলে আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায়।

মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে

থানকুনি স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত রাখে ফলে আমাদের মানসিক চাপকে কমায় এবং ঠিকমতো ঘুমে সাহায্য করে।

ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখে

থানকুনি পাতায় প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।যা আমাদের ত্বকের কোষগুলোকে পুনজ্জীবিত করে।থানকুনি পাতা ব্রনের দাগ কমিয়ে ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল করে তুলে।ত্বককে দ্রুত বাধ্যক আসা থেকে রক্ষা করে।

ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে

থানকুনি পাতায় এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং আন্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান থাকায় একটি দ্রুত ক্ষত সারাতে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করে

থানকুনি পাতায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে ।যা আমাদের হজমের সাহায্য করে কোষ্ঠকাঠি ও গ্যাস দূর করে। আমাদের পেটকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে

থানকুনি পাতায় থাকা বিভিন্ন ফাইটো কেমিক্যাল শরীরের আঘাত ব্যাথা ফোলা সহ বিভিন্ন প্রদাহ কমাতে বিশেষভাবে কার্যক্রম ভূমিকা পালন করে।

রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে

থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে আমাদের শরীরের রক্তের গুনগত মান উন্নত হয়।যার ফলের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকে এবং রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে

থানকুনি পাতায় এক রকমের বিশেষ প্রাকৃতিক উপাদান থাকে।এটি আমাদের রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ফলে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বেড়ে যায়।শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে যা আমাদের ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে রাখতে সহায়ক।

হাড় ও দাঁতের মজবুত করে

থানকুনি পাতায় থাকা উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন সি আমাদের হাড় ও দাঁত মজবুত করে এবং হাড় ও দাঁত বিভিন্ন সমস্যা কমাতে সহায়ক।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

থানকুনি পাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কপার,আয়রন, জিঙ্ক রয়েছে। এই সব উপাদান আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে বাড়িয়ে দেয়।

যৌবন ধরে রাখতে থানকুনি পাতার উপকারিতা

তারুণ্য ধরে রাখতে দরকার ভেতর থেকে সুস্থ থাকা।থানকুনি মধ্যে এমন প্রাকৃতিক কিছু উপাদান রয়েছে যা আপনার শরীরকে ভেতর দূর থেকে সুরক্ষিত রাখে এবং বার্ধক্যকে দূরে রাখে।থানকুনি পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে।ত্বকের দাগ রুক্ষতা গুলিয়ে যাওয়ার এই সবকিছুর জন্য দায়ী ফ্রি র‍্যাডিকেল।

ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম।থানকুনি পাতা শরীরে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়।কোলাজেন এমন একটি প্রোটিন যা আমাদের ত্বককে টানটান ও মসৃণ করে তোলে।থানকুনি আমাদের শরীরের কোলাজেন উৎপাদনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ফলে ত্বক তরুণ ও প্রাণবন্ত দেখায়।আবার আমার শরীরের রক্ত সঞ্চালনাও বৃদ্ধি করে ।

শরীরের রক্ত চলাচল ঠিকমতো হইলে পুষ্টি শরীরের প্রতিটি অংশ ঠিকমতো পৌঁছায়।ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। পুষ্টি ঠিকমতো চুলে ও ত্বক পৌঁছালে চুল পড়া কমে এবং ত্বক প্রাণবন্ত দেখায়।থানকুনি পাতা শরীরের শরীরের ক্ষতকে সারিয়ে শরীরের কোষ পুনর্গঠন করতে সাহায্য করে।ত্বকের দাগ দ্রুত সারিয়ে আপনার ত্বককে ক্লিন ও ক্লিয়ার করে তোলে।

মানুষের অতিরিক্ত মানসিক চাপ মানুষকে দ্রুত বাধ্যক্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।থানকুনি পাতা মানসিক চাপ, স্ট্রেস লেভেল কমাতে সাহায্য করে যা।ভেতর থেকে তরুণ্য ধরে রাখতে কাজ করে।থানকুনি পাতা প্রাকৃতিক এক টনিক যা আপনার তারুণ্য ও যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে।

ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার টোনার

ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহার করলে ত্বকের দাগ-ক্ষত সারাতে, প্রদাহ কমাতে, রক্ত সঞ্চালনতা ভালো করতে বিশেষভাবে কার্যকর ভূমিকা রাখে।থানকুনি পাতার টোনার ত্বকের জন্য এক প্রাকৃতিক হাইড্রেটর ও হিলার হিসেবে কাজ করে।থানকুনি পাতার টোনার নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ, সতেজ প্রাণবন্ত দেখায়।আসুন এখন জানি কিভাবে ঘরে বসেই এই প্রাকৃতিক টোনার বানাতে পারবেন।

টোনার বানানোর উপকরণ-

১ কাপ ফ্রেশ থানকুনি পাতা
১কাপ পানি
গোলাপজল।

প্রস্তুত প্রণালী

পাতাগুলো ভালোভাবে ধুয়ে ছোট ছোট করে কেটে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।একটি পাত্রের পানি ফুটিয়ে ঠান্ডা করে রাখতে হবে ।এরপর একটি ছাকনি দিয়ে সেই পেস্ট থেকে রস বের করে নিয়ে ফুটিয়ে রাখা ঠান্ডাপানি সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে।

এর মধ্যে চাইলে এক ফোঁটা গোলাপজল মিশিয়ে নিতে পারেন। এরপর একটি স্প্রের বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন ।এক সপ্তাহ পর্যন্ত এটা সংরক্ষণ করে ব্যবহার করতে পারবেন।অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন এক সপ্তাহের বেশি না হয়।

ব্যবহারের পদ্ধতি

ভালোভাবে মুখ ধোয়ার পর মুখে স্প্রে করে হালকা করে হাত দিয়ে মাসাজ করতে হবে।এতে ত্বক নরম ও হেলদি হয়।এটি ব্যবহারের পর মুখ ধোয়া যাবে না এভাবেই রেখে দিতে হবে।সকালে ও রাতে দুই বেলা ব্যবহার করলে আসা অনুযায়ী ফল পেতে সাহায্য করবে।প্রথমবার ব্যবহার করার আগে অবশ্যই টেস্ট করে নিন যে কোন এলার্জিক রিয়াকশন হচ্ছে কিনা।এবং খুব বেশি সময় ফ্রিজের বাইরে রাখবেন না।

থানকুনি পাতা এই টোনার ব্যবহারের ফলে ত্বকের পোর ছোট করে ত্বক টানটান রাখে।ফুসকুড়ি,ব্রণ, র‍্যাশ জাতীয়দের কমাতে সাহায্য করে।ত্বকের লালচে লালচে ভাব এবং জ্বালাপোড়া দূর করে।ত্বকের প্রাকৃতিক আদ্রতা বজায় রেখে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং মসৃণতা বাড়াইতে সাহায্য করে।

চুলের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহার

চুল ঘন সুন্দর স্বাস্থ্যবান রাখতে থানকুনি পাতা দারুণ উপকারী।থানকুনি পাতা চুলের গোড়া মজবুত করে হলে অতিরিক্ত চুল পড়া কমায় ।মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়ে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। যাদের চুল রুক্ষ তাদের জন্য থানকুনি পাতা দারুন ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।থানকুনি পাতা চুলের আদ্রতা ধরে রাখে।ফলে চুল নরম প্রাণবন্ত দেখায়।চুলের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহারের কিছু পদ্ধতি চলুন জেনে নেওয়া যাক।

থানকুনি পাতার হেয়ার প্যাক

এক কাপ থানকুনি পাতা ভালোভাবে ধুয়ে পিষে এর মধ্যে দুই থেকে তিন চামচ নারিকেল তেল মিশিয়ে নিতে হবে।এরপর চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালোভাবে লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট রাখুন। এরপর আপনার নিজের ব্যবহারিত শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।এই প্যাকটি সপ্তাহে এক থেকে দুইবার ব্যবহার করতে পারবেন।

থানকুনি পাতার জল

থানকুনি পাতা ভালো করে ধুয়ে পানির মধ্যে দিয়ে সেদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর পানি ঠান্ডা হয়ে গেলে সেই পানি দিয়ে শেষ বার মাথার স্কাল্প থেকে চুলের আগা পর্যন্ত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার মাথার ত্বক ঠান্ডা থাকবে এবং চুল মসৃণ করতে সাহায্য করে।সপ্তাহে এক থেকে দুইবার ব্যবহার করতে পারবেন।

থানকুনি পাতার রস এবং তেলের মাসেজার

এক কাপ থানকুনি পাতা ভালোভাবে ধুয়ে রস বের করে এটির সাথে নারিকেলের তেল মিশিয়ে স্কােল্পে ভালোভাবে মালিশ করুন।এরপর এটি ৪০ থেকে ৬০ মিনিট রেখে ব্যবহারিত শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।সপ্তাহে ১-২ ব্যবহার করতে পারবেন।

অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে এক সপ্তাহে ১-২বারের বেশি ব্যবহার করা যাবে না। অতিরিক্ত ব্যবহার করলে আপনার মাথার ত্বক শুষ্ক সহ বিভিন্ন ক্ষতি হতে পারে।

থানকুনি পাতার সহজ এবং স্বাস্থ্যকর রেসিপি

থানকুনি পাতা শুধু ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয় না এটি খাবার হিসেবেও দারুন উপকারী।Thankuni patai বিদ্যমান পুষ্টি আমাদের শরীরের নানা সমস্যার সমাধান করে। আবার খেতেও ভালো লাগে। চলুন কিছু রেসিপি সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।

থানকুনি পাতার ভর্তা

প্রয়োজনীয় উপকরণ-

১ কাপ থানকুনি পাতা, ১ -২টা কাঁচামরিচ, ১-২টা রসুন কোয়া,৩-৪টা ধনেপাতা, সরিষার তেল, লবণ।

প্রস্তুত প্রণালী-

থানকুনি পাতা ভালোভাবে ধুয়ে সাথে কাঁচা মরিচ, রসুন, লবণ ,এবং ধনেপাতা দিয়ে বেটে নিন।সরিষার তেল দিয়ে মাখিয়ে পরিবেশন করুন। এটি গরম ভাতের সঙ্গে খেতে অনেক মজা লাগে। থানকুনি পাতার ভর্তা পেটের সমস্যা, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে দারুন কার্যকর।

থানকুনি পাতার তরকারি

প্রয়োজনীয় উপকরণ-

১ মুঠো থানকুনি পাতা, আলু, পেঁপে, সরিষার তেল,জিরা,লবণ,হলুদ,কাঁচামরিচ।

প্রস্তুত প্রণালী-

আলু,পেঁপে কিউব করে কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন।এরপর একটি কড়ায়ে সরিষার তেল গরম করে নিয়ে তাদের জিরা দিয়ে ফোড়ন দিয়ে নিন। এরপর আলু ,পেঁপে সামান্য ভেজে নিন।লবণ, হলুদ,৪-৫টি কাঁচামরিচ মিশিয়ে পানি দিয়ে সেদ্ধ করতে দিন।

সেদ্ধ হয়ে গেলে থানকুনি পাতাগুলো কেটে ৪-৫ মিনিট ফুটিয়ে নিন।আমি বাড়িতে পরিবেশন করুন থানকুনি পাতার তরকারি।এই তরকারিটির আমাদের লিভারের সমস্যা এবং রক্ত পরিশোধনে বিশেষভাবে কাজ করে।

থানকুনি পাতার শরবত

প্রয়োজনীয় উপকরণ-

১ চামচ মধু অথবা চিনি, ১ চিমটি লবণ ,১ চামচ লেবু রস,এক গ্লাস ঠান্ডা পানি এবং বরফ কুচি।

প্রস্তুত প্রণালী-

থানকুনি পাতা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিয়ে রস বের করে নিন।এরপর লেবুর রস, মধু  এবং থানকুনি পাতার রস একসাথে পানি সাথে মিশিয়ে বরফ কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন। থানকুনি পাতার শরবত আমাদের শরীরকে ঠান্ডা রাখে। হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় উপকার করে।

ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহার

থানকুনি পাতার রস-

থানকুনি পাতা বাহির এবং ভেতর দুই ভাবেই ত্বকের যত্ন নেয়।সকালে খালি পেটে দুই থেকে তিন চামচ থানকুনি পাতার রস খেলে রক্ত পরিষ্কার হয় হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান গুলো ত্বকের কোষগুলোকে রক্ষা করে।রক্ত দূষণমুক্ত হলে এমনিতেই ত্বক উজ্জ্বল ব্রণ মুক্ত ও দাগমুক্ত দেখায়।

থানকুনি পাতার ফেসপ্যাক-

থানকুনি পাতা বেটে মধু অথবা মধুতে এলার্জি থাকলে কাঁচা দুধের সাথে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট রেখে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিন ।এই ফেস প্যাক নিয়মিত ব্যবহার করলে মুখের দাগ দূর হবে, উজ্জ্বলতা বাড়াবে, এবং ত্বক টানটান হবে।

থানকুনি পাতা ও অ্যালোভেরার মাস্ক-

থানকুনি পাতা বেটে অ্যালোভেরা জেল এর সাথে মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখুন। এরপর নরমাল ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন এতে আপনার ত্বকের রুক্ষতা দূর হবে, ত্বক নরম হবে এবং ব্রণের সমস্যা দূর হবে।এটি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ব্যবহার করতে পারবেন।

থানকুনি পাতার স্ক্রাব-

থানকুনি পাতা ভালোভাবে ধুয়ে রোদে শুকিয়ে ব্লেন্ড করে পাউডার বানিয়ে নিন। এরপর থানকুনি পাতার পাউডারের সাথে চিনি এবং সামান্য নারকেল তেল মিশিয়ে স্ক্রাব বানিয়ে নিন। স্ক্রাবটি মুখে হালকা করে ঘষে ঘষে মাসাজ করুন ২-৩মিনিট এবং নরমাল ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।সপ্তাহে১-২বার স্ক্রাবটি ব্যবহার করতে পারবেন। এটি ব্যবহারের ফলে আপনার স্কিনের ডেড সেল গুলো দূর হবে এবং আপনার ত্বক মসৃণ দেখাবে।

থানকুনি পাতার আইস কিউব-

থানকুনি পাতা ভালোভাবে ধুয়ে পানি দিয়ে সেদ্ধ করে নিন।সেই পানি ঠান্ডা করে ছেকে ট্রেতে করে ফ্রিজে রেখে দিন। প্রতিদিন সকালে একটি করে আইস কিউব নিয়ে মুখে আলতো করে ঘষে ঘষে লাগান।নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি আপনার ত্বককে সতেজ করে তুলবে।

থানকুনি পাতা ও হলুদের মাস্ক-

পাতাগুলো ভালো করে ধুয়ে বেটে এক চিমটি কাচা হলুদ মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রাখুন।১৫ থেকে ২০ মিনিট পর নরমাল ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন।এই মাস্কটি আপনার ব্রণের জীবাণুকে মেরে ফেলতে, দাগ হালকা করতে রাখতে সাহায্য করে।সপ্তাহে ২-৩দিন ব্যবহার করলে আশা অনুরূপ ফল পেতে সাহায্য করবে।

থানকুনি পাতা ও টক দইয়ের ফেসপ্যাক-

থানকুনি পাতা ভালোভাবে ধুয়ে পাতাগুলো বেটে এক চামচ টক দই মিশিয়ে ফেসপ্যাকটি তৈরি করে নিন।এরপর মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি আপনার ত্বক হাইড্রেটেড করতে, স্কিন টোন উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।

থানকুনি পাতা ও চালের গুড়ার স্ক্রাব-

থানকুনি পাতা ভালোভাবে ধুয়ে বেটে হাফ চা চামচ চালের গুড়া মিশিয়ে স্ক্রাবটি তৈরি করে নিন।স্ক্রাবটি ২-৪মিনিট হালকা হাতে মাসাজ করুন।এরপর নরমাল ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।থানকুনি পাতা ও চালের গুড়ার স্ক্রাব আপনার ত্বকের ডেড সেল এবং ব্ল্যাকহেডস দূর করতে সাহায্য করবে।সপ্তাহে ১-২বার স্ক্রাবটি ব্যবহার করতে পারবেন

ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহারের সময় আমি বলব যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা আছে তার আগে কোন ছোট জায়গায় মেখে টেস্ট করে নিন যেকোনো প্যাক ব্যবহার করার আগে।কখনোই ওর নিয়মের অত্যধিক ব্যবহার করবেন না। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিনের বেশি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

থানকুনি পাতার ১০টি ঔষধি গুণ এবং রোগে ব্যবহার

প্রাচীন যুগ থেকেই আয়ুর্বেদিক এবং ইউনানী ওষুধ হিসেবে এটি বহুল ব্যবহৃত।প্রাচীনকাল থেকেই পেটের সমস্যা দূর করতে, স্মৃতিশক্তি বাড়াইতে এমনকি সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও থানকুনি পাতা ব্যবহৃত হয়ে থাকে।চলুন এখন জানি থানকুনি পাতার কিছু ঔষধি গুণ এবং যেসব রোগের জন্য উপকারী।

রক্ত পরিষ্কার করে- 

থানকুনি পাতা রক্তের দূষণ কমায় ফলে ব্রণ, ফুসকুড়ি, চুলকানি জাতীয় সমস্যা সমাধানে কাজ করে। নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়।

পেটের রোগে-

পেটের রোগের জন্য থানকুনি পাতার রস অত্যন্ত উপকারী।নিয়মিত খেলে গ্যাস, হজমের এবং ডায়রিয়ার সমস্যা দূর হয়।

ক্ষত শুকাইতে-

থানকুনি পাতা চূর্ণ করে ক্ষতস্থানে লাগালে দ্রুত সেরে যায়।থানকুনি পাতার অ্যান্টিসেপটিক হওয়ার কারণে ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হওয়া থেকে রক্ষা করে।

মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়- 

থানকুনি পাতা নিয়মিত খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে এবং মানসিক চাপ কমিয়ে মন শান্ত রাখতে সাহায্য করে। শিশুদের পড়াশোনায় মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য থানকুনি পাতা বিশেষভাবে কাজ করে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে- 

থানকুনি পাতা রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে ফলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। উচ্চ রক্তচাপ রোগীরা যদি নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খায় তাহলে উপকার পাবে আশা করা যায়।

লিভারের অসুখে-

থানকুনি পাতা লিভারের অসুখের টনিক হিসেবে কাজ করে।হেপাটাইটিস,জন্ডিস, লিভারের দুর্বলতায় থানকুনি পাতা অত্যন্ত উপকারী।

বাত, আর্থ্রাইটিস রোগে-

থানকুনি পাতায় অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান রয়েছে।এটি বাতের ব্যথা,পায়ের গিটের ব্যথা, আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

মুখের ঘা এবং মাড়ির অসুখে-

থানকুনি পাতার রস দিয়ে কুলিকুচি করলে মুখের ঘা, মাড়ির রক্তপাত সহ মুখের দুর্গন্ধ কমাতে সাহায্য করে।

রক্তস্বল্পতা দূর করে-

থানকুনি পাতায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। যা রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে অ্যানিমিয়া রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

শ্বাসকষ্ট রোগে-

থানকুনি পাতার রস মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে কাশি কমে কমায়,গলা পরিষ্কার রাখে এবং শ্বাসকষ্টের কষ্ট থেকে আরাম পেতে সাহায্য করে।

তবে থানকুনি পাতা একসঙ্গে বেশি খাওয়া উচিত না। দিনে ৫ থেকে ৬ টি পাতায় যথেষ্ট।নিয়ম মেনে অল্প পরিমাণে খেতে হবে।থানকুনি পাতা নিয়ম মেনে পরিমিত পরিমাণে খেলে ত্বক, চুল এবং স্বাস্থ্যের অনেক উপকার পাওয়া যায়।

গর্ভকালীন সময়ে থানকুনি পাতা খাওয়ার উপকারিতা

একজন নারীর নারীর জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ সময় হইল তার গর্ভাবস্থা।এই সময় শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত জরুরী।প্রাকৃতিক এই ভেষজ উপাদান গর্ভকালীন অবস্থায় অনেক উপকারে আসে। তবে তা অবশ্যই সঠিক নিয়মে সেবন করা উচিত।সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

গর্ভকালীন অবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন হয় ফলে মায়েরা অনেক সময় মানসিক চাপে ভোগেন।থানকুনি পাতা স্নায়ু শান্ত রাখতে সাহায্য করে ফলে মন ভালো থাকে এবং ঘুমের মান উন্নত হয়।এছাড়া অনেক মায়ের গর্ভাবস্থায় ব্লাড প্রেসার হাই দেখা যায় যা মা এবং শিশু উভয়ের জন্যই বেশ বিপজ্জনক। থানকুনি পাতা রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েরা গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্যতে ভোগে। থানকুনি পাতা খেলে পেট ঠান্ডা থাকে। ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পেটের সব সমস্য দূর করে।এই বিশেষ সময়ে শরীরে ইমিউনিটি সিস্টেম অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। থানকুনি পাতা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে বিভিন্ন সংক্রামক থেকে সহজে রক্ষা পেতে সহায়তা করে।

এছাড়াও থানকুনি পাতায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে।আয়রন রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখে এতে গর্ভকালীন অবস্থায় রক্তশূন্যতা,অ্যানিমিয়া ঝুঁকি কমায়।গর্ভকালীন সময়ে প্রতি তিন মাস খুবই সংশোধনশীল সময় তাই এই সময়ে বাড়তি সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে এই জন্য থানকুনি পাতা খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করুন।

যাদের থানকুনি পাতা খাওয়া উচিত না

থানকুনি পাতা যতই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হোক সবার জন্য খাওয়া হওয়া উচিত না।কিছু রোগে থানকুনি পাতা খেলে উপকারের চাইতে ক্ষতি হতে পারে। চলুন জানি থানকুনি পাতা খাওয়ার থেকে কাদের বিরত থাকা দরকার।

গর্ভাবস্থায় শুরুতে থানকুনি পাতা খেলে ইউটেরাইন সংকোচন হয়ে যেতে পারে।যা গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় তাই গর্ভবতী নারীদের খুব সাবধানে চিকিৎসায়কের পরামর্শ ছাড়া খাওয়া উচিত না।লিভারের সমস্যায় অতিরিক্ত থানকুনি পাতা খেলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। তাই যারা লিভারের সমস্যায় ভুগছেন তারা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।

যাদের থানকুনি পাতা খেলে এলার্জি জনিত সমস্যা হয় তারা থানকুনি খাওয়া থেকে থেকে বিরত থাকুন। কারণ যাদের এলার্জিজনিত সমস্যা আছে তারা খেলে দেখা যাবে তবে চুলকানি,র‍্যাশ হচ্ছে।অনেক সময় শ্বাসকষ্ট হতে পারে।শিশুদের থানকুনি পাতা খাওয়ানোর আগে অবশ্যই চিকিৎসা পরামর্শ নিয়ে খাওয়াতে হবে এবং অতিরিক্ত কখনোই তাদের খাওয়ানো যাবে না।অতিরিক্ত খেলে পেট খারাপ, বমি, স্নায়ুর সমস্যা হয়ে যেতে পারে।

যাদের রক্তপাত জনিত সমস্যা আছে তাতে কখনোই থানকুনি পাতা খাওয়া উচিত না। কারণ এই পাতা রক্ত পাতলা করে দেওয়ার উপর প্রভাব ফেলে।থানকুনি পাতা খাওয়ার আগে নিজের অবস্থা বুঝে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত। যাতে এর ভেতর থেকে উপকার পাওয়া যায় এবং কোনো ঝুঁকিতে পড়তে না হয়।

থানকুনি পাতা কোথায় পাওয়া যায়

আমাদের দেশের অতি পরিচিত একটি ঔষধি গাছ থানকুনি পাতা।থানকুনি পাতা সহজেই পাওয়া যায়। গ্রামের স্যাঁতসেঁতে জায়গা, পুকুরপাড়ে, রাস্তার ধারে, ধান ক্ষেতের পাশে থানকুনি গাছ দেখা যায়।কিন্তু শহরের মানুষের জন্য থানকুনি পাতা একটু কম সহজ লভ্য।

থানকুনি পাতা বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া জুড়ে একটি পরিচিত ঔষধি গাছ।থানকুনি পাতা বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তান এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো যেমন থাইল্যান্ড মালয়েশিয়া ইন্দোনেশিয়াতেও পাওয়া যায়।

চীনের কিছু অঞ্চলেও থানকুনি পাতা পাওয়া যায়। চীনে এটি ঔষধি গাছ হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত এবং ব্যবহৃত হয়ে থাকে প্রাচীন কাল থেকেই।

ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহার।প্রাকৃতিক ঘরোয়া সমাধান:আমার মন্তব্য

ত্বকের যত্নে থানকুনি পাতার ব্যবহার একটি প্রাচীন ও প্রমাণিত উপায়।প্রিয় পাঠক,আমার মতে থানকুনি পাতা প্রকৃতির এক অসাধারণ উপহার।যার মাধ্যমে ঘরে বসেই আমরা ত্বকের এবং স্বাস্থ্যের কিংবা চুলের নানান সমস্যার সমাধান করতে পারি।বাজারের নামীদামি প্রোডাক্ট এর পেছনে না ছুটে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বক ও চুলের যত্ন নেওয়া নেওয়াই উত্তম।

তবে অবশ্যই সঠিক নিয়মে এবং সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।আশা করি এই লেখাটির মাধ্যমে আপনারা অবশ্যই থানকুনি পাতার বিশেষ জাদুকরি উপকার,ব্যবহারের নিয়ম, সর্তকতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url